স্বাধীন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর অবদান-মেজর জেনারেল মোঃ আব্দুর রশীদ (অব.)
স্বাধীন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বিনি বঙ্গবন্ধুর অবদান-মেজর জেনারেল মোঃ আব্দুর রশীদ (অব.)
বাংলাদেশের স্থপতি ও রুপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মেছিলেন বলেই বাংলাদেশ স্বাধীনতার স্বাদ পেতে সক্ষম হয়েছিল বাঙ্গালী মুক্ত হয়েছিল এবং নিজেদের ভাগ্য গড়তে পেরেছিল। আজ বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে উন্নয়নের মডেল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর দেশ গঠনের দিক নির্দেশনা ও তিনি বেঁচে থাকাকালীন দেশ গঠনের যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে তাঁর কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর প্রজ্ঞা ও সাহসী নেতৃত্বের কারনে। ১৯৪৮ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালীর মুক্তির জন্য লড়াই করে শুরু করেন এবং বাঙ্গালীর অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সর্বত ভাবে ত্যাগ স্বীকার করে দেশের মানুষের কল্যানে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর ৭ই মার্চের এক অনবদ্য ভাষণের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও মুক্তির ডাক দিয়ে সুস্পষ্ট ভাবে উচ্চারন করেছিলেন “এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম”। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধ-নক্সা সামরিক কৌশলের রূপরেখা অতি সুন্দর ও পরিষ্কারভাবে বিবৃত করেছিলেন। তাঁর সেই অমোঘ বানী আজও বানী চিরন্তনী হয়ে ধ্বনিত হয় বারে বারে। “ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল”, “তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোল”। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বংগবন্ধুর দেয়া সামরিক কৌশল অনুসরন করে। এবং ভারতের সহজোগিতায় দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে দখলদার পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু দেশের প্রতিরক্ষার ভার নিজ কাধে তুলে নিয়ে বিশ্বে এক অনবদ্য নজীর সৃষ্টি করেন। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর জন্ম মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে। তিনি দেশ রক্ষার উপযোগী একটি নিজস্ব আধুনিক ও চৌকশ সামরিক বাহিনী গঠনে সমর সরঞ্জাম যোগানের পাশাপাশি সদ্য স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য সামরিক বাহিনীর কাঠামোকে নতুন করে সাজিয়ে দেন। যোগ্য সামরিক নেতৃত্ব তৈরি করার উপর গুরুত্ব দেন এবং তার ফলস্রুতিতে বাংলাদেশ সামরিক একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন কুমিল্লা সেনানিবাসে এবং প্রথম কমিশন প্রদানের সামরিক কুচকাওয়াজে তিনি নিজে উপস্থিত হয়ে সামরিক বাহিনীর অফিসারদের কাছে জাতির প্রত্যাশার রুপরেখার বিব্রত করে একটি দিকনিরশেনামুলক ভাষণ দিয়েছিলেন যা আজও তা সামরিক অফিসারদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে রয়েছে। স্বাধীন ও গনতান্ত্রিক দেশের সামরিক বাহিনীর যে গুণাবলী ও দেশ রক্ষার জন্য যে ত্যাগ তিতিক্ষার প্রয়োজন সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে পাকিস্তানি মন মানসিকতা থেকে মুক্ত করে উপনিবেশিক ধ্যান ধারনা থেকে মুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ একটি সুপ্রশিক্ষিত ও চৌকশ সামরিক বাহিনী বিনির্মাণে মনোযোগ দিয়েছেন। ১০৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি প্রনয়ন করে এক যুগান্তকারী উদাহরন সৃষ্টি করেন। যার পথ ধরে তার কন্যা ভিশন ২০৩০ প্রনয়ন করে সামরিক বাহিনীকে আধুনিক করে স্বাধীন দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষম করে সামরিক বাহিনীকে এক নতুন রুপে রূপান্তরিত করেন যার ফলে বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী আন্তরজাতিক অঙ্গনে সমানভাবে সমাদৃত।
বংবন্ধুর অনবদ্য বিদেশ নীতি “সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয় “ অনুসরন করে পথ চলায় বাংলাদেশ একটি সক্ষম ও চৌকশ সামরিক বাহিনী ষত্বেও সাধিনতার পঞ্চাশ বছরেও কারু সাথে সমরে লিপ্ত হয়নি এবং দেশের বিঘ্নহীন উন্নয়নের জন্য এগিয়ে গিয়ে রজত জয়ন্তীর বছরে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করে সক্ষম্ভাবে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে। বৃহৎ রাষ্ট্রের হুমকি ধামকি থেকেও নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষমতা দেখিয়েছে ।