ই-কমার্স ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আনুন সম্পাদকীয় (শ্যামল দত্ত, সম্পাদক, ভোরের কাগজ)

ই-কমার্স ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আনুন

সম্পাদকীয় (শ্যামল দত্ত, সম্পাদক, ভোরের কাগজ)

প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০ , ৯:৩৭ অপরাহ্ণ

অনলাইন কেনাকাটা। প্রতারণা নাকি আস্থার জায়গা- এমন প্রশ্ন সামনে আসছে বারবার। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩ বছর ধরে এ খাতের প্রবৃদ্ধি প্রায় একশ ভাগ। অর্থাৎ প্রতি বছর প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে এ খাত। ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ই-কমার্স বাজারের আকার বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজার ক্রেতা অনলাইনে পণ্যের অর্ডার দেন। ১৩ থেকে ১৫ লাখ মানুষ বছরে একবার হলেও অনলাইনে অর্ডার করেন। অর্থাৎ বার্ষিক লেনদেন এখন ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে সামনের বছর এটি হবে ১৬ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা। অনলাইন লেনদেনে গ্রাহকদের আগ্রহ যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে এ খাতের উদ্যোক্তা। এই খবরটি অবশ্যই ইতিবাচক। তবে অগ্রগতির পাশাপাশি প্রতারণার মাত্রাও কম নয়। সর্বশেষ উদাহারণ হচ্ছে ই-কমার্স সাইট ইভ্যালির ৩৭ লাখ গ্রাহক এখন অনিশ্চয়তায় ভোগছে। এ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ইভ্যালির কার্যক্রম খতিয়ে দেখছে। ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আসার পরই নতুন করে ই-কমার্স খাত নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা সামনে আসছে। অনলাইন ব্যবসা প্রসার ইতিবাচক হলেও সময় এসেছে এই ব্যবসাকে একটি নির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে আনা জরুরি। ডিজিটাল যুগে গ্রাহকদের পণ্যের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে খোলা হচ্ছে নানা রকম অনলাইন শপ। বলা চলে, নাগরিক জীবনযাপনে অনলাইন কেনাকাটা এখন যুক্ত হয়ে আছে। স্মার্ট জীবনযাপনে সময় বাঁচাতে ও প্রয়োজনে শহরের পাশাপাশি মফস্বলেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এ তালিকায় রয়েছে গহনা, পোশাক, মুঠোফোন, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, প্রস্তুত করা খাবার, বই, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ওষুধ ইত্যাদি। শুধু পোশাক বা গহনা নয়, বাড়ির জন্য চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্য এখন অনলাইনে কিনছেন। ই-কমার্স ওয়েবসাইটের বাইরেও ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে বেচাকেনা করছেন অনেকে। ই-কমার্স নিয়ে বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে। অনলাইনে কেনাকাটা নিয়ে অনেকে সন্তোষ প্রকাশ করলেও এ নিয়ে অভিযোগও রয়েছে বিস্তর। অনেকে অনলাইনে দেখানো পণ্যের সঙ্গে সরবরাহ করা পণ্যের মিল পান না। উদাহারণ হিসেবে ধরা যাক, ‘অনলাইনে পণ্য কিনলে সময় বাঁচে, ঝক্কিও এড়ানো যায়। তাই ঘরের দুয়ারে প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে নিবন্ধন নেয় ইভ্যালি।’ মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, মোবাইল ফোন সেট, টেলিভিশন ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি গাড়ি বিক্রিতেও নেমেছে। কিন্তু শুরু থেকেই তারা নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেনি। নানাভাবে মানুষের আকর্ষণ জাগিয়ে বিপাকে ফেলেছে। সাধারণ ক্রেতার বেশির ভাগই সমস্যায় পড়েছে ইভ্যালির লেনদেনে। যারা ই-কমার্সের নামে প্রতারণা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। জনস্বার্থ চিন্তা করতে হবে। এখানে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া এবং বিনা স্ট্যাবলিশমেন্টে ব্যবসা করা হচ্ছে। এতে সরকার যথেষ্ট রাজস্ব হারাচ্ছে। ২০০৯ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন জারি করা হয়েছে। এই আইনের উদ্দেশ্য- কোনো ক্রেতা কোনোভাবে প্রতারিত যাতে না হয় এবং আইনত নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করা না হয় কিংবা সরবরাহসহ ব্যবস্থায় ক্রেতার কোনো ক্ষতি না হয় ইত্যাদি। এই আইনের বাস্তবায়ন জরুরি।

 

https://www.bhorerkagoj.com/2020/09/12/%e0%a6%87-%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%b8-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%b8%e0%a6%be-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0/

https://www.bhorerkagoj.com/print-page/?id=241782&title=%E0%A6%87-%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B8%20%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE%20%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A7%87%20%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%A8

Add a Comment