ব্যাংক কেলেঙ্কারি ঘটনায় দুদকের ভূমিকা জোরালো হোক সম্পাদকীয় (শ্যামল দত্ত, সম্পাদক, ভোরের কাগজ)

ব্যাংক কেলেঙ্কারি ঘটনায় দুদকের ভূমিকা জোরালো হোক

সম্পাদকীয় (শ্যামল দত্ত, সম্পাদক, ভোরের কাগজ)

প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২০ , ৮:৩৭ অপরাহ্ণ

 

বড় কয়েকটি জালিয়াতির মাধ্যমে গত ১০ বছরে ব্যাংকিং খাতে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি খাতের বড় কয়েকটি ব্যাংক থেকে এ অর্থ লোপাট হয়। এসব ঘটনায় মামলা হলেও দুদক এখনো তদন্ত শেষ করতে পারেনি। কবে শেষ হবে তাও অনিশ্চিত। বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংকসহ কয়েকটি বড় জালিয়াতির হোতা হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিরা এখনো দেশ-বিদেশে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। বড় জালিয়াতির ঘটনাগুলোয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করেছে, সরকারের কাছে সব তথ্য আছে। কিন্তু অগ্রগতি নেই। বড় বড় লুটপাটের ঘটনার পর থেকে অর্থনীতি ও উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি ব্যাংকিং খাতে বিরাজ করছে বিশৃঙ্খলা। চরম অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসা পরিচালনার নামে দেশের তফসিলি ব্যাংক থেকে এ বিশাল অঙ্কের টাকা নিয়ে হজম করে ফেলেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। আমরা মনে করি, যেহেতু ব্যাংকিং খাতের টাকা জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের আমানত, তাই এ খাতের দুর্বৃত্তদের কোনো ধরনের ছাড় দেয়ার অবকাশ নেই। অর্থনৈতিক উন্নয়নের নানা সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতির এবং সমৃদ্ধির উজ্জ্বল চিত্র আমাদের উল্লসিত করলেও আমাদের সব উচ্ছাস থেমে যায় ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির অঙ্ক দেখলে। এ বিষয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে সবাই সচেতন এবং ওয়াকিবহাল। বিষয়টি সবাইকে বিব্রত করে, এ নিয়ে সরকারি বিভিন্ন মহলে এবং ব্যাংক খাত সংশ্লিদের মধ্যে দারুণ অস্বস্তি রয়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই, রাজনৈতিক ছত্রছায়া, উচ্চ আদালতে রিট, সর্বোপরি বিচার না হওয়ার কারণেই শেয়ারবাজার, হলমার্ক, যুবক ও ডেসটিনির মতো বড় বড় অর্থ আত্মসাৎ ও ঋণখেলাপির ঘটনা বাড়ছে। এমনকি নিয়ন্ত্রক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বলতা, রাঘববোয়ালদের বাঁচাতে উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ এবং তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করার কারণে আর্থিক খাতের লুটেরা উৎসাহিত হচ্ছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া অর্থ আত্মসাৎ সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে ভুয়া কাগজপত্র ও অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে মোটা অঙ্কের ঋণ দেয়াই এর প্রমাণ। ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনতে হলে প্রথমেই ঋণখেলাপিসহ প্রতিটি অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তা-পরিচালকদের সাজা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের সম্পদ জব্দ করে জনগণের শ্রম-ঘামের আমানত উদ্ধার করতে হবে। রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে যেন রিকভারি এজেন্টরা জিম্মি হয়ে না পড়ে সেদিকেও গভীর মনোযোগ দিতে হবে। সর্বোপরি দুদকের মামলাগুলো গতিশীল করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনার বিষয়টি জরুরি। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় বা সামাজিক অবস্থান বিবেচনা না করে অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

https://www.bhorerkagoj.com/2020/09/11/%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%95-%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%98%e0%a6%9f%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a7%9f/

 

https://www.bhorerkagoj.com/print-page/?id=241617&title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%95%20%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%20%E0%A6%98%E0%A6%9F%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A7%9F%20%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%20%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8B%20%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%95

Add a Comment