ডেঙ্গু নিয়ে হেলাফেলা নয় সম্পাদকীয় (শ্যামল দত্ত, সম্পাদক, ভোরের কাগজ)

এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত হচ্ছে ডেঙ্গুর মৌসুম। আগামী মাস ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পিক টাইম। করোনা সংকটে ডেঙ্গু বিষয়টি অনেকটা ঢিলেঢালা। এমন পরিস্থিতি হলে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবে অনেক মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, সবচেয়ে বেশি মানুষ এই জ্বরে আক্রান্ত হয় সেপ্টেম্বরে। ইতোমধ্যে মশার কামড়ে প্রতিদিনই শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের খবর আসছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৬৬ জন। গত বছরের প্রথম তিন মাসে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৩ জন। বিষয়টি উদ্বেগের। এখনই মশক নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হলে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এখনো ডেঙ্গু জ্বরের কোনো প্রতিষেধক বের করতে পারেনি সরকার। ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আইইডিসিআরের তথ্য মতে, সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। তবে জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত পরিস্থিতি বেশি খারাপ থাকে। সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য দায়ী। হঠাৎ থেমে থেমে স্বল্পমেয়াদি বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশি মাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা পায়। ফলে এডিস মশার বিস্তারও ঘটে বেশি। এ মশা যত বেশি হবে ডেঙ্গুর হারও তত বাড়বে। উৎস বন্ধ না করতে পারলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকেই যাবে। গত বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ চলাকালীন এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। এরপর দুই সিটি মশক নিয়ন্ত্রণে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সেগুলো ছিল কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটির তেমন কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে দেখা যায়নি। আগামী দুই মাসের মধ্যে দুই সিটি করপোরেশন এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে টেকসই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। নইলে এবার গত বছরের চেয়ে চরম মূল্য দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃষ্টিপাত হলে এ সমস্যা আরো বাড়বে। কাজেই দেরি না করে আমাদের এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। প্রথমত, সবখানে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এডিস নিধন এবং এডিসের বংশবিস্তার রোধে জোরদার অভিযান পরিচালনা করবে- এ প্রত্যাশা নগরবাসীর। এছাড়া ডেঙ্গুর প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরি, ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করা, ডেঙ্গু হলে করণীয় সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করাও দরকার।

https://www.bhorerkagoj.com/2020/09/08/%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a7%81-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%a8%e0%a7%9f/

https://www.bhorerkagoj.com/print-page/?id=241261&title=%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%81%20%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87%20%E0%A6%B9%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%20%E0%A6%A8%E0%A7%9F

Add a Comment